মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
হরিপুরে গ্রামবাংলার ঝোপঝাড় হতে বিলুপ্তির পথে কুচফল ওয়াজের মাঠ কাপানো আর নারীদের খাট কাপানো হুজুর মুফতি মুহাম্মদ শফিকুজ্জামান দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ৮০০ নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: রিজভী নির্বাচন কবে, সেই ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকেই : প্রেস উইং মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী রহিম ও তার ছেলের অত্যাচার নির্যাতনে অসহায় এলাকাবাসী উত্তরা ব্যাংকের এমডি রবিউল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারনের দাবিতে রাজপথে বিল্পবী ছাত্র জনতা ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে দেখে কেঁদে ফেললেন মির্জা ফখরুল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ওসমানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ-এর বিশেষ বাণী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খ. ম. আমীর আলী
যশোরে আসামির স্ত্রীকে গণধর্ষণ: সত্যতা মিলেছে পরীক্ষায়

যশোরে আসামির স্ত্রীকে গণধর্ষণ: সত্যতা মিলেছে পরীক্ষায়

ভিশন বাংলা ডেস্ক: যশোর জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফলে শার্শার সেই মাদক মামলার স্ত্রীকে গণধর্ষণের সত্যতা মিলেছে। মঙ্গলবার ওই গৃহবধূর আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাওয়া রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।

 বৃহস্পতিবার বিষিয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ। তিনি বলেন, ধর্ষণে কে বা কারা জড়িত ডিএনএ টেস্ট ছাড়া নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়।

এদিকে গণধর্ষণকালে শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুল পরিচয়দানকারীকে পুলিশ আটক করতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে তার নেতৃত্বে গণধর্ষণ করা হয়েছে ওই গৃহবধূর। কিন্তু ভিকটিমের সামনে ওই খায়রুলকে জেলা পুলিশ সুপার হাজির করলে তিনি চিনতে পারেনি বলে পুলিশের দাবি। তাহলে খায়রুল নামের অন্য এসআই, নাকি অন্য কেউ পুলিশের নাম ব্যবহার করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটি খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে যশোর জেলা পুলিশ।

গত মঙ্গলবার দুপুরে ধর্ষণের শিকার ওই নারী অভিযোগ করেন, তার স্বামী এক সময় চোরাচালানি পণ্য আনা নেওয়ার কাজ করতেন। বর্তমানে ওই কাজের সঙ্গে সে জড়িত নেই। ২৫ আগস্ট শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল তার স্বামীকে আটক করে ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে চালান দেন। গত সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এসআই খায়রুল, পুলিশের সোর্স কামরুল, লতিফসহ বেশ কয়েকজন আমার বাড়িতে এসে স্বামীকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবে বলে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে। এসআই খায়রুল বলে, টাকা দিলে মামলা হালকা করে ৫৪ ধারায় দেবে। টাকা দিতে পারবো না জানালে এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এক পর্যায়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে পুলিশের সোর্স কামরুল ও এসআই খায়রুল ধর্ষণ করে। বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানালে, তারা যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পরীক্ষার জন্য যেতে বলে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফ আহমেদ ওই দিন জানিয়েছিলেন, শার্শার এক নারী জরুরি বিভাগে এসে পুলিশ কর্তৃক গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানান। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনা পুলিশের রেফারেন্স ছাড়া আমরা পরীক্ষা করতে পারি না। পরে বিষয়টি কোতয়ালি থানার ওসিকে অবহিত করলে তিনি এসে ভিকটিমকে নিয়ে যান। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

বৃহস্পতিবার হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহমেদ বলেন, ‘গত ৩ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূর আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাওয়া রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। কিন্তু সেই বীর্য কার বা কাদের তা ডিএনএ টেস্ট ছাড়া বলা যাবে না। সিআইডির মাধ্যমে ডিএনএ টেস্ট করাতে হয়। ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া গেলেই জানা যাবে এক; নাকি একাধিক ব্যক্তির বীর্য রয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সিআইডির পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয়েছে, আলামত প্রস্তুত রাখতে।’

এ ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আদালত ৮ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছে। আটকৃকতরা হলেন- শার্শা উপজেলার চটকাপোতা গ্রামের কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল, লক্ষ¥ণপুর গ্রামের আবদুল লতিফ ও আবদুল কাদের। তবে প্রধান অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল পরিচয়দানকারীকে এ মামলায় আসামি করা হয়নি। কিন্তু শার্শা উপজেলার গোড়পাড়া ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর একজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ওই মামলায়। এছাড়া গণধর্ষনের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক জানিয়েছেন, ধর্ষণের অভিযোগে ভিকটিম নিজেই শার্শা থানায় মামলা করেছেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আরেকজন অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। শার্শা উপজেলার গোড়পাড়া ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুলের নাম আসলে, ভিকটিমের সামনে তাকে হাজির করা হয়। কিন্তু ভিকটিম বাস্তবে এই খায়রুলকে শনাক্ত করতে পারেননি। এজন্য একজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

এসআই খায়রুলকে প্রত্যাহার প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, তিনি কর্মরত থাকলে মামলার তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে। যাতে নিরপেক্ষভাবে মামলার তদন্ত হয়, সেই জন্য তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার আরও বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন শিকদারকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন সার্কেল এএসপি (নাভারণ) ও কোর্ট ইন্সপেক্টর।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com